Take a fresh look at your lifestyle.

মা থেকে শিশুতে সংক্রমণ প্রতিরোধে এইচআইভি, সিফিলিস ও হেপাটাইটিস বি নির্মূলে বিশ্বে প্রথম মালদ্বীপ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি

৬৪

বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
মা থেকে শিশুতে সংক্রমণ প্রতিরোধে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে মালদ্বীপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দেশটিকে এইচআইভি, সিফিলিস ও হেপাটাইটিস বি–এই তিনটি রোগে মা থেকে শিশুতে সংক্রমণ নির্মূলের স্বীকৃতি দিয়েছে। আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে মালদ্বীপকে ‘ট্রিপল এলিমিনেশন’ অর্জন করার স্বীকৃতি দেয় ডব্লিউএইচও।

এর আগে ২০১৯ সালে মালদ্বীপকে মা থেকে শিশুতে এইচআইভি ও সিফিলিস সংক্রমণ নির্মূলের স্বীকৃতি দিয়েছিল সংস্থাটি। এবার নতুন করে হেপাটাইটিস বি সংক্রমণ নির্মূলের স্বীকৃতি পাওয়ায়, একক দেশ হিসেবে তিনটি সংক্রমণ রোধের সাফল্য অর্জনের অনন্য রেকর্ড গড়ল দ্বীপরাষ্ট্রটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস বলেন, ‘মালদ্বীপ দেখিয়েছে, রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও টেকসই বিনিয়োগ থাকলে এই সংক্রমণগুলো প্রতিরোধ সম্ভব। এই অর্জন অন্য দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’

মালদ্বীপে ৯৫ শতাংশ গর্ভবতী নারী প্রসবপূর্ব সেবা পান, যেখানে এইচআইভি, সিফিলিস ও হেপাটাইটিস বি পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত। নবজাতকদের শতকরা ৯৫ ভাগকেই জন্মের সময় হেপাটাইটিস বি টিকা দেওয়া হয়।

২০২২ ও ২০২৩ সালে দেশটিতে কোনো শিশু এইচআইভি বা সিফিলিস নিয়ে জন্মায়নি, আর ২০২৩ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে, ছোট শিশুদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি সংক্রমণের হার শূন্য—যা নির্মূলের নির্ধারিত মান অতিক্রম করেছে।

স্বাস্থ্যসেবায় জিডিপির ১০ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করে মালদ্বীপ সরকার। সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নীতির আওতায় অভিবাসীসহ সবাই বিনা মূল্যে টিকা, প্রসবপূর্ব সেবা ও পরীক্ষা পান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলেই ২০২৪ সালে আট হাজারের বেশি শিশু জন্মগত সিফিলিস নিয়ে জন্ম নেয়। ২৫ হাজার এইচআইভি পজিটিভ গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত এই অঞ্চলে প্রায় চার কোটি ২০ লাখ মানুষ।

ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কার্যালয়ের পরিচালক ক্যাথারিনা বোহেম বলেন, ‘মালদ্বীপের এই অর্জন দেখায়, স্বাস্থ্যসেবায় ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তির প্রতিশ্রুতি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।’

মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিজরি আব্দুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক স্বীকৃতি মালদ্বীপের জন্য গর্বের একটি অনন্য মুহূর্ত। এটি মা, শিশু এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের জাতির দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

‘ট্রিপল এলিমিনেশন’ শুধু স্বাস্থ্য খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক নয়, বরং এটি আমাদের জনগণের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি যে, আমরা একটি স্থিতিশীল, ন্যায়ভিত্তিক ও উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবো। এই স্বাস্থ্যসেবা এমন হবে, যা কাউকে পিছনে ফেলে না’—যোগ করেন আব্দুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে মালদ্বীপ আরও উন্নত ডেটা ব্যবস্থাপনা, অভিবাসীদের লক্ষ্যভিত্তিক সেবা, বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা ও পরীক্ষাগারের মানোন্নয়নের মাধ্যমে এই অগ্রগতি ধরে রাখবে। এই অর্জনকে টেকসই করতে তারা মালদ্বীপকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.