ফুসফুসের রোগ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ

বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মানাল মিজানুর রহমান তার ‘ডিপার্টমেন্ট অব রেসপিরেটরি মেডিসিন—হাইলাইটস অ্যান্ড হরাইজন’ শীর্ষক নিবন্ধে বলেন, সারা বিশ্বের ৩০% মানুষ বক্ষব্যাধি রোগে আক্রান্ত এবং ফুসফুসের রোগ সারাবিশ্বে মানুষের মৃত্যুর তৃতীয় বৃহৎ কারণ।

আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী বিশ্ব ফুসফুস দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে বিএমইউতে র‌্যালি ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আযোজন করে বিএমইউর বক্ষব্যাধি বিভাগ ও চেস্ট এন্ড হার্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। এসময় বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এসব তথ্য দেন।

ডা. মিজানুর বলেন, বিএমইউর রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগে বিভিন্ন ক্লিনিক চালু রয়েছে। ডি-ব্লক, কক্ষ নং ১৫১২-এ প্রতি শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্লিপ ও পালমোনারি হাইপারটেনশন ক্লিনিক পরিচালিত হয়। একই কক্ষে প্রতি সোমবার একই সময়ে ডিফিউজ প্যারেনকাউমাল লাঙ ডিজিজ (ডিপিএলডি) ক্লিনিক এবং প্রতি বুধবার ডিফিকাল্ট অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ ক্লিনিকের মাধ্যমে রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়।

এছাড়া, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ প্রতিদিন রেফারেল গ্রহণ করে দ্রুত চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাওয়া রেফারেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট রেফারেলের ২৭% ছিল সার্জারি বিভাগে, ২১.৩% কার্ডিওলজিতে, ১৯.৪% নেফ্রোলজিতে, ১৬.৬% জেনারেল ইমার্জেন্সিতে, ৭.১% আইসিইউতে, ৫.২% ইন্টারনাল মেডিসিনে, ১.৯% হেপাটোলজিতে এবং ১.৪% অন্যান্য বিভাগে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের দেশে পালমোনারি হাইপারটেনশনের চিকিৎসায় নতুন আপডেট ড্রাগ ব্যবহার করা যাবে। তবে নতুন ড্রাগ ব্যবহারের পূর্বে আমাদের জানতে হবে কী মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে। পালমোনারি হাইপারটেনশনের আধুনিক চিকিৎসার সুবিধা-অসুবিধা, চিকিৎসা ব্যয় এবং দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় এর ব্যবহার বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চেষ্ট এন্ড হার্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব সহযোগী ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, সারা বিশ্বের মানুষের মৃত্যুর পাঁচটি প্রধান কারণের চারটি প্রধান কারণই হল রেসপিরিটোরি জনিত। এছাড়াও তিনি বলেন, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, এজমা, সিওপিডির উপর চিকিৎসকদের জন্য নতুন গাইডলাইন প্রনোয়নের কাজ করছে চেস্ট এন্ড হার্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

বিএমইউর ফেস-বি রেসডেন্ট ডা. মো. মনিরুজ্জামান ও ডা. মেহনাজ আজিজ হোমা ‘ব্রেথিং ইন্টু দ্যা ফিউচার: লেটেস্ট এডভান্সেস ইন রেসপিরিটোরি’ শীর্ষক নিবন্ধে পালমোনারি হাইপারটেশন, ডিপিএলডি, যক্ষা, এজমা, সারকয়ডোসিস এর আধুনিক চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে আটটায় বিএমইউর কেবিন ব্লক থেকে সচেতনমূলক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে সারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়। বৈজ্ঞানিক সেমিনারটি বিএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে ১০ টায় অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সেমিনাররে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএমইউর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহ্ রীন আখতার, চেষ্ট এন্ড হার্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, বিএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ, পরিচালক ( হাসপাতাল) ব্রিগে. জেনা. আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন, বিএমইউর প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ ফরহাদ, বিএমইউর পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সহযোগী অধ্যাপক ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপ ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর রেসপিরিটোরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ। সঞ্চলনা করেন বিএমইউর রেসপিরিটোরি মেডিসিন বিভাগের ফেইজ-বি রেসিডেন্ট তাজকিয়া তাসনিম আহম্মেদ ও পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন রেসপিরিটোরি মেডিসিন বিভাগের ফেইজ-বি রেসিডেন্ট ডা. কবিরুল আহমেদ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমইউর রেসপিরিটোরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম। বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও শোভাযাত্রাসহ পুরো কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরিটোরি মেডিসিন বিভাগের ফেস-বি রেসিডেন্ট ডা. মীজানুর রহমান ভূঞা।

বৈজ্ঞানিক সেমিনারে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেব উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফেরদৌস-উর রহমান, চেস্ট এন্ড হার্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের থোরাসিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল আনাম কিবরিয়া ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরিটোরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজাশিষ চক্রবর্তী।

Comments (০)
Add Comment