হেলথ ইনফো ডেস্ক:
২৭তম বিসিএসের নিয়োগবঞ্চিত ৬৭৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।একই সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা অক্ষুণ্ন রাখতে নিজ ব্যাচের নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রথম প্রজ্ঞাপনের তারিখ হতে ভূতাপেক্ষভাবে নিয়োগ আদেশ কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানা গেছে।
নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ৯০ জন, পুলিশ ক্যাডারের ৭০ জন, অডিট ক্যাডারের ৫ জন, আনসার ক্যাডারের একজন, কর ক্যাডারের একজন, সমবায় ক্যাডারের পাঁচজন, খাদ্য ক্যাডারের দুইজন রয়েছেন।
২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় তিন হাজার ৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে এবং দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে।
ফল বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা রিট আবেদন করেন। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্ট ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলকে বৈধ ঘোষণা করে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রিট আবেদনকারীরা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে লিভ টু আপিল করেন। আপিল বিভাগ এই বিসিএস পরীক্ষার নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ১৩৭ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দেন। এর মধ্য থেকে ৬৭৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে আজ গেজেট প্রকাশ করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২৭তম বিসিএস পরীক্ষা-২০০৫ এর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ৫ নভেম্বরের চিঠির সুপারিশক্রমে ৬৭৩ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের প্রবেশ পদে জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ অনুসারে (২২,০০০-৫৩,০৬০/- টাকা বেতনক্রমে) নিয়োগ দেওয়া হলো।
নিয়োগের শর্তে বলা হয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অথবা সরকার নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। এ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে তাকে তার চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সরকার যেভাবে স্থির করবে সেভাবে পেশাগত ও বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার এ শিক্ষানবিশকাল অদুর্ধ্ব দুবছর বৃদ্ধি করতে পারবে।
শর্তে বলা হয়, শিক্ষানবিশকালে যদি তিনি চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযোগী বলে বিবেচিত হন, তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ব্যতিরেকে তাকে চাকরি হতে অপসারণ করা যাবে। উল্লিখিত প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন, বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং শিক্ষানবিশকাল সন্তোষজনকভাবে অতিক্রান্ত হলে তাকে চাকরিতে স্থায়ী করা হবে। প্রশিক্ষণের জন্য কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি দেওয়া কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অঙ্গীকারনামা দাখিল করে তাকে প্রশিক্ষণে যেতে হবে।
এতে বলা হয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের একজন জামানতদারসহ ৩০০ টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এ মর্মে একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে যে, যদি তিনি শিক্ষানবিশকালে অথবা শিক্ষানবিশকাল উত্তীর্ণ হওয়ার তিন বছরের মধ্যে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন, তবে প্রশিক্ষণকালে তাকে প্রদত্ত বেতন-ভাতা, প্রশিক্ষণ উপলক্ষ্যে উত্তোলিত অগ্রিম/ভ্রমণভাতা/অন্যান্য ভাতাদি এবং তার প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয়িত সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে তিনি বাধ্য থাকবেন।
শর্তে আরও বলা হয়, চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার ক্ষেত্রে তার ইস্তফা সরকার কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পূর্বে যদি তিনি তার কর্তব্যকাজে অনুপস্থিত থাকেন, তবে তার কাছে সরকারের প্রাপ্য সমুদয় অর্থ বিধান অনুসারে আদায় করা হবে এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগপ্রাপ্তদের জ্যেষ্ঠতা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে তাদের ব্যাচের নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রথম যে তারিখে নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল সেই তারিখ হতে ভূতাপেক্ষিকভাবে নিয়োগ আদেশ কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, তাদের ব্যাচের প্রথম নিয়োগ প্রজ্ঞাপনের যোগদানের তারিখ থেকে তাদের ধারণাগত জ্যেষ্ঠতা বজায় থাকবে। তবে এর ফলে তারা কোনো বকেয়া আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন না।