বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
ভালো র্যাঙ্ক করে দেশের প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়া আজও বেশ কঠিন। এমডি-এমএস’র মতো স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির সুযোগ পাওয়া আরও কঠিন।
বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: ভালো র্যাঙ্ক করে দেশের প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়া আজও বেশ কঠিন। এমডি-এমএস’র মতো স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির সুযোগ পাওয়া আরও কঠিন। আর ডিএম-এমসিএইচ’র মতো শীর্ষ পাঠ্যক্রমে সুযোগ পাওয়া তো রীতিমতো সাধ্যসাধনার ফসল! ডাক্তার হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নিট পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও বছর বছর বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে ডাক্তারি পড়তে পড়তে কোর্স থেকে ছিটকে যাওয়া ডাক্তারি পড়ুয়ার সংখ্যাও।
গত ৫ বছরে একাধিক এইমস সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানের ১১০০’র বেশি ছাত্রছাত্রী ডাক্তারি পড়তে পড়তেই ছেড়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি তথ্য জানার অধিকার আইনে এমনই চোখ কপালে ওঠার মতো তথ্য সামনে এসেছে। দেশের জুনিয়র ডাক্তারদের শারীরিক-মানসিক অবস্থা কেমন, তা জানতে সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন ইউনাইটেড ডক্টর্স ফ্রন্ট (ইউডিএফ) আরটিআই করে কিছু উত্তর জানতে চায়।
২০২০ থেকে ২০২৪—এই পাঁচ বছরে মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রীদের উপর র্যাগিংয়ের কতগুলি ঘটনা ঘটেছে, কতজন ছাত্রছাত্রী কোর্স ছাড়লেন, কতজন আত্মহত্যা করেছেন, কতজন মানসিক চাপ বা অবসাদের জন্য ডাক্তার দেখাচ্ছেন, কতজন অতিরিক্ত কাজের চাপে ন্যূনতম সাপ্তাহিক ছুটি পর্যন্ত না পেয়ে অভিযোগ করেছেন—এমন সাতটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছিল।
এর উত্তরে উঠে আসে চমকে দেওয়া তথ্য। জানা যায়, পাঁচ বছরে পড়তে পড়তে ডাক্তারি ছেড়েছেন ১,১৬৬ জন ডাক্তারি পড়ুয়া। ১১৯ জন আত্মহত্যা করেছেন। র্যাগিং, হেনস্তা এবং মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপে মানসিক সমস্যা ও অবসাদের ক্ষেত্রে অভিযোগ এসেছে ১৬৮০টি।
চিকিৎসক সংগঠন ইউডিএফ-এর সর্বভারতীয় সভাপতি ডাঃ লক্ষ্য মিত্তল বলেন, ‘এইমস দিল্লি, ভুবনেশ্বর, নাগপুর, জিমপার পণ্ডীচেরির মতো প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলির যা তথ্য এসেছে, বলবার নয়! খোদ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন এসব তথ্য জানিয়েছে। তরুণ চিকিৎসক ও ডাক্তারি পড়ুয়ারা এই সিস্টেমে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছেন। কিছু একটা না করলেই নয়। সেজন্য আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। আমাদের দাবি, দিনে ৮ ঘণ্টা ডিউটি। টানা ১২, ২৪ বা ৩৬ ঘণ্টা নয়!’
রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসক নেতা ডাঃ অনিকেত মাহাত বলেন, ‘ইউডিএফ-এর সমস্ত দাবির সঙ্গে সহমত। আমাদের যা ডিউটির ধরন, সাবান, তেল, দাঁত মাজার ব্রাশ কেনার সময়টুকুও পাই না অধিকাংশ সময়।
বিশিষ্ট মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী বলেন, ‘সবচেয়ে মানসিক চাপের মধ্যে আছেন পিজিটিরা। অনেকেই আসছেন কাউন্সেলিংয়ের জন্য। সত্যি বলতে, এই ধরনের অস্বাভাবিক চাপের ট্রেনিং প্রোগ্রামের মধ্যে দিয়ে গেলে কেউ মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে না।
সূত্র৷ : দৈনিক বর্তমান