বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ক্ষোভে নাটোর শহরের জনসেবা হাসপাতালের মালিক ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলামকে হত্যা করেন তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আসাদুল ইসলাম আসাদ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে জনসেবা ক্লিনিকে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নাটোর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর থেকে তথ্য ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় যৌথভাবে কাজ করার একপর্যায়ে হাসপাতালের স্টাফ আসাদুল ইসলাম আসাদকে মূল আসামি হিসেবে শনাক্ত করা হয়। আসাদ বগুড়ার ধুনট উপজেলার বাসিন্দা। ২০২৪ সালে এসএসসি পাসের পর তিনি টিএমএসএস মেডিকেলে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি শুরু করেন।পরে নাটোরে ডা. আমিরুল ইসলামের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে তিন বছর ধরে কর্মরত ছিলেন জনসেবা ক্লিনিকে। কর্মরত অবস্থায় হাসপাতালের এক নারী স্টাফকে ঘিরে ডা. আমিরুল, ওই নারী এবং আসাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে গত ২৫ আগস্ট ডা. আমিরুল ওই নারী স্টাফ ও আসাদকে মারধর করেন এবং চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করেন। এরপর আসাদ বগুড়ায় ফিরে গেলেও তার মধ্যে প্রতিহিংসার জন্ম হয়। প্রতিশোধ নিতে তিনি বগুড়া থেকে একটি বোরকা ও দুটি ছুরি কিনে ফের নাটোরে ফিরে আসেন।
রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় বোরকা পরে আসাদ ডা. আমিরুল ইসলামের চেম্বারে প্রবেশ করেন এবং খাটের নিচে লুকিয়ে থাকেন। রাত ১টার দিকে ডাক্তার নিজের কক্ষে ফিরে আসেন এবং ওষুধ সেবন শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে গভীর ঘুমের মধ্যে থাকা ডা. আমিরুলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন আসাদ।
পরে ভোর সোয়া ৬টার দিকে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে যান আসাদ। যাওয়ার পথে তিনি বোরকাটি সিংড়া আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এলাকার নদীতে এবং দুটি ছুরি নন্দীগ্রাম এলাকায় ফেলে দেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন আরও বলেন, ‘আসাদ দীর্ঘদিন ডা. আমিরুল ইসলামের পিএ হিসেবে কাজ করায় তার চলাফেরা ও অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও প্রতিহিংসার জেরেই তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। যে বিষয়গুলো সামনে এসেছে এবং আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিও দিতে রাজি হয়েছেন। মূলত ক্ষোভের বশেই তিনি এ কাজ করেছেন।’