Take a fresh look at your lifestyle.

স্বাস্থ্যখাতে তহবিল সংকটে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ডব্লিউএইচও

৯৬

হেলথ ইনফো ডেস্ক :
স্বাস্থ্যখাতে বৈদেশিক সহায়তা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় তহবিল সংকটে পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই সংকটের প্রভাব মোকাবিলায় নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি ‘স্বাস্থ্য অর্থায়নের জরুরি অবস্থা মোকাবিলায়: তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন’ শিরোনামে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে ডব্লিউএইচও। এতে বলা হয়েছে, দেশগুলো কীভাবে হঠাৎ অর্থসংকট মোকাবিলা করে নিজেদের টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে পারে—সে বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডব্লিউএইচও জানায়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে স্বাস্থ্যখাতে বৈদেশিক সহায়তা বা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে (এলএমআইসিস) স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তাত্ক্ষণিক ও গুরুতরভাবে ব্যাহত হবে। চলতি বছর মার্চ মাসে পরিচালিত ডব্লিউএইচওর এক জরিপে ১০৮টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, অর্থায়ন কমে যাওয়ার কারণে অনেক দেশে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা—যেমন মাতৃসেবা, টিকাদান, স্বাস্থ্যজরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া, এবং রোগ নজরদারি কার্যক্রম ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

এছাড়া ৫০টিরও বেশি দেশ জানিয়েছে যে, স্বাস্থ্য ও সেবাকর্মীদের চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, ‘দাতা সংস্থার সহায়তা হঠাৎ কমে যাওয়ায় বহু দেশকে কঠোরভাবে আঘাত করেছে, এতে প্রাণহানি ঘটছে এবং বহু বছরের অর্জিত স্বাস্থ্যসাফল্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে এই সংকটই দেশগুলোর জন্য একটি সুযোগ—বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে নিজস্ব সম্পদের ভিত্তিতে টেকসই আত্মনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার। ডব্লিউএইচওর নতুন নির্দেশিকা দেশগুলোকে স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখতে অর্থ আরও ভালোভাবে সংগ্রহ, বণ্টন, অগ্রাধিকার নির্ধারণ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সহায়তা করবে।’

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক বলেন, ‘এ বছরের অর্থায়ন কমে যাওয়ায় দেশগুলোর বহু বছরের চলমান স্বাস্থ্যঅর্থায়ন-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ আরও জটিল হয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ঋণের বোঝা বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যক্তিগত খরচে চিকিৎসা গ্রহণের উচ্চহার, বাজেট ঘাটতি, এবং বহিঃসহায়তার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা।, সহায়তার হঠাৎ ও অপ্রত্যাশিত কাটছাঁট বহু দেশকে কঠোরভাবে আঘাত করেছে, এতে প্রাণহানি ঘটছে এবং বহু বছরের অর্জিত স্বাস্থ্যসাফল্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তাদের নতুন নির্দেশিকায় দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্যখাতকে যেন রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

ডব্লিউএইচও বলেন, স্বাস্থ্যব্যয়কে কেবল ব্যয় হিসেবে না দেখে, বরং সামাজিক স্থিতি, মানবিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বিনিয়োগ হিসেবে দেখা উচিত। অর্থাৎ, স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ মানে শুধু চিকিৎসা নয়—এটি একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তার ভিত্তি।

নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, দেশগুলোকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে বিদেশি সহায়তা কমে যাওয়ার তাৎক্ষণিক প্রভাব মোকাবিলা করা যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে সহায়তা-নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভর কাঠামো গড়ে তোলা যায়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.