Take a fresh look at your lifestyle.

৪৮তম বিশেষ বিসিএসে উত্তীর্ণ দুই হাজার চিকিৎসককে নিয়োগের দাবি

৭৪

হেলথ ইনফো ডেস্ক :
৪৮তম বিশেষ বিসিএসে উত্তীর্ণ প্রায় দুই হাজার চিকিৎসককে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেন, দেশে এখনো ১২ হাজার ৯৮০ জন চিকিৎসক দরকার। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এই চাকরি দিতে হবে। তাদের চাকরি দিতে না পারলে সংস্কার আলোচনার কোনো অর্থ নেই।

রোববার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সমাবেশে এ সব কথা বলেন তারা।

অনুষ্ঠানে রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাকলাইন রাসেল বলেন, এ চিকিৎসকেরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ বঞ্চিত। সরকার এরই মধ্যে তিন হাজার জনকে নিয়োগ দিলেও বাকি দুই হাজারকে অবৈধভাবে অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে।

একসঙ্গে বেশি ডাক্তার নিয়োগ দিলে ভবিষ্যতে জটিলতা দেখা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের যুক্তিকে ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, এরই মধ্যে দেশে প্রায় ১৩ হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এ দুই হাজার চিকিৎসককে নিয়োগ দিলে কোনো সমস্যা হবে না, বরং জনগণ উপকৃত হবে।

৩৯তম বিসিএসে অতিরিক্ত দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের নজির রয়েছে উল্লেখ করে এই ভাসকুলার সার্জন বলেন, সরকার চাইলে এবারও একইভাবে অতিরিক্ত নিয়োগ দিতে পারে। নতুন বিসিএস আয়োজন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। তাই বর্তমান উত্তীর্ণদের নিয়োগই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান।

অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এখনো আমাদের চিকিৎসক দরকার ১২ হাজার ৯৮০ জন। আপনি যদি স্বাস্থ্যসেবা দিতে চান, তাহলে এই চাকরি তো দিতে হবে। সংস্কার সংস্কার করবেন, আর চিকিৎসকদের চাকরি দিতে পারবেন না, তাহলে এগুলো বলার তো কোনো মানে হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেই দেশের স্বাস্থ্যসেবা ভালো নয়, সেই দেশ অজ্ঞানতার মধ্যে আছে। যেই দেশের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি সরকারের বিশেষ নজর নেই, সেই দেশ মানবিকই নয়। যেই দেশে গরিব মানুষের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয় না, সেই দেশ কল্যাণের দেশ হতে পারে না।’

‘খুব দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এসব বন্ধ করতে হবে। সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে কেন তারা চাকরিগুলো দিতে পারবে না। আর যদি বলে ভাই আমি আছিই কয় মাস, চার মাস পর ভোট হবে, চলে যাবো, এগুলো করতে পারবো না। তাহলে তাদের জন্য লজ্জা। তারা চৌদ্দ মাস ছিল, কেন করলো না এই সময়ে?—যোগ করেন মান্না।

চিকিৎসকদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমি মনে করি, সারাদেশের বিবেকবান মানুষের এই দাবিগুলো সমর্থন করা উচিত। দুনিয়াজোড়া স্বাস্থ্যসেবার ওপরে মিনিমাম জাতীয় বাজেটের পাঁচ শতাংশ খরচ করা হয়। আমরা কত খরচ করি?’

এ সময় চুয়ান্ন বছরে দেশের প্রাপ্তি কী জানতে চান ডাকসুর এই সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি)। বলেন, ‘এ রকম কথা বললে সবাই হতাশ হবে। বলতে গেলে কিছুই হয়নি। আমরা সফল হতে পারি, এর একটা বিশ্বাস মানুষের মধ্যে আসতে হবে। সেজন্য রাজনীতিবিদরা যে কথা বলবেন, সেগুলো খুবই হিসাব করা, সুচারু ও সঠিক হওয়া চাই।’

সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা নীতিগতভাবে চিকিৎসকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। আপনারা ন্যায্য দাবি তুলেছেন। করোনার সময় চিকিৎসকেরাই ছিলেন সামনের সারিতে, অথচ এখনো তাদের নিয়োগ নিয়ে জটিলতা চলছে। চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে ৪৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ চিকিৎসক ডা. ইসরাফিল আহম্মেদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রায়ই উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসক সংকটের খবর আসে। কিন্তু একজন চিকিৎসককে দিনে ১৫০ থেকে ২০০ রোগী দেখতে হয়—এ অবস্থায় মানসম্মত সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।

ইসরাফিল আহম্মেদ জানান, দেশের ৪৪৫টি উপজেলায় গড়ে তিন থেকে চারজন চিকিৎসক কর্মরত আছেন, যেখানে অন্তত ২০ থেকে ২৪ জনের প্রয়োজন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিপ্তর ডেন্টালসহ তিন হাজার ১২০ জন চিকিৎসককে নিয়োগ দিয়েছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.