Take a fresh look at your lifestyle.

শেবাচিম হাসপাতালে আধুনিক কেবিন ব্লক ও দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা উদ্বোধন

৬২

নিজস্ব প্রতিবেদক :

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মধ্য ও উচ্চবিত্ত রোগীদের জন্য আধুনিক মানের বিলাসবহুল সাধ্যে ভাড়ায় ২২টি কেবিন খুলে দিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর। আজ মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ১০টায় জড়াজিন্ন থেকে আধুনিকায়নে রূপান্তর করা কেবিন উদ্বোধন করেন তিনি। একই সাথে, প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ বছর পর, আধুনিকায়নের ছোঁয়া দিতে হাসপাতালের সামনের মাঠের মাঝে নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন দুইটি পানির ফোয়ারা উদ্বোধন করা হয়।

সকাল ১০টায় আধুনিক কেবিন ব্লকের উদ্বোধন শেষে হাসপাতালের ৪র্থ তলার সার্জারি সেমিনার হলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, সরকারি হাসপাতাল শুধু নি¤œবিত্তদের জন্য নয়, এখানে মধ্য ও উচ্চবিত্তরা সেবা নিচ্ছেন। কারণ বেসরকারি হাসপাতালে খরচ দিয়ে মধ্য ও উচ্চবিত্তদেরও হিমশিম খেতে হবে। তাই সকলের জন্য সরকারি হাসপাতালে সেবা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তাই নি¤œবিত্তদের পাশাপাশি মধ্য ও উচ্চবিত্তদের জন্য মান-সম্মত চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আধুনিক কেবিন ব্লকের উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে মাত্র ১০০০ টাকা ভাড়ায় আধুনিক মানের ২২টি কেবিন চালু করা হয়েছে। কেবিন গুলোর মান বেসরকারি হাসপাতালের চেয়েও ভালো।

পরিচালক বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো বাংলাদেশের কোনো সরকারি হাসপাতালের সামনে বড়ো মাঠ নেই। অপরূপ সৌন্দর্যের এই হাসপাতালকে আরো দৃস্টি নন্দন করতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ উদ্বোধন করা হলো দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা। পর্যায় ক্রমে হাসপাতালের সামনের দুইটি মাঠে ফুলেল বাগান, লেক, ওয়ার্ক ওয়ে আরো আধুনিকায়ন করা হবে। তিনি সৌন্দর্য রক্ষায় পান, চুন ও ডাব নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা করার জন্য পান, চুন আর ডাবের খোসা সবচেয়ে ক্ষতিকারক। তাই হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধির দায়িত্ব আমাদের আর পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সবার।

এর আগে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর হাসপাতালের সামনের দুইটি মাঠে নির্মিত দৃষ্টি নন্দন পানির ফোয়ারা উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, হাসপাতাল উন্নয়নে আমরা নানামুখী কাজ করে যাচ্ছি। পূর্বের মেডিসিন ভবনটি এখন সম্পূর্ণ বহির্বিভাগ করা হয়েছে। পুরাতন ভবনটি আন্তঃবিভাগ হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। এই ভবনে আরো ৩শ বেড সংযোজন করা হয়েছে। এতে করে রোগীদের অনেক কষ্ট লাগব করা সম্ভব হবে।

ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মাজহারুল রেজওয়ান রেজা’র উপস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নজমুল আহসান, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মাহামুদ হাসান, সহকারী পরিচালক (অর্থ ও ভা-ার) ডা. আবদুল মুনায়েম সাদ সহ সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জড়াজিন্ন কেবিন নিয়ে রোগীর নানান অভিযোগ। পূর্বে হাসপাতালের পঞ্চম তলার ‘এ’ ব্লকের কেবিন গুলোর ফ্লোরের টাইলস ভাঙা, দেয়ালে ছত্রাক, ছাদের পলেস্তারা নেই, দরজা-জানালায় ছিটকানি নেই। এমনকি টয়লেটের দরজাই নেই ও যা আছে তাও ভাঙা ছিলো। কেবিনের রোগীদের এমন অভিযোগ দুর করতে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর গত জুন মাসে সম্পূর্ণ আধুনিক মানের কেবিন তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি প্রথম পর্যায়ে হাসপাতালের পঞ্চম তলার এ ব্লকের বাইশটি কেবিন আধুনিকায়নে রুপান্তর করার উদ্যোগ নেন। প্রতিটি কেবিনে নতুন পুরাতন প্লাস্টার, দরজা ও জানালা ভেঙে নতুনভাবে প্লাস্টার করা, উন্নতমানের দরজা-জানালা স্থাপন ও দৃষ্টি নন্দন টাইলস্ বসানোর ব্যবস্থা করেন। বিলাসবহুল এই কেবিন গুলোতে নতুন বেড সংযোজন, বসার সোফা, এসি, পর্যাপ্ত অক্সিজেন, চেয়ার, ক্যাবিনেট সেট, দেয়াল, ঘড়ি, জামা-কাপড় রাখার র‌্যাক, রুম স্প্রে, পানির জগ, ওয়াটার হিটার, পানি পান করার গ্লাস, উন্নত মানের পর্দা, উন্নত মানের টাইলস সম্বলিত টয়লেটে বেসিন এবং হাই কমোড, টিস্যু এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নানান সুযোগ সুবিধায় ভরপুর এই শীতাতপ নিয়ন্তিত আধুনিক এই কেবিনের ভাড়া মাত্র এক হাজার টাকা। এর সাথে রোগীর ১৭৫ টাকা পথ্য বিল দিতে হবে কেবিনের রোগীদের।

এদিকে দেশের পুরোনো আটটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম দৃষ্টিনন্দন শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতালটি সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান পরিচালক নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর দৃষ্টিনন্দন পানির ২টি ফোয়ারা উদ্বোধন করেছেন। মাত্র এক মাস আগে এই ফোয়ারা তৈরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.