Take a fresh look at your lifestyle.

শেবাচিম : নানা সমস্যায় ভোগা হাসপাতালটি ধীরে ধীরে তার যৌবন ফিরে পাচ্ছে

৪২

শাহিন সুমন :

প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছর, বয়সের ভারে নানা সমস্যায় ভোগা হাসপাতালটি ধীরে ধীরে ফের তার যৌবন ফিরে পাচ্ছে। দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবার ভরসা স্থল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতায় হাসপাতালটি অচল হতে বসেছিল। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষের কাছে চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছিল এই হাসপাতাল। যে নিজেই নানা সমস্যায় ভূগছে । সেখানে সাধারন মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে ফেরাটাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।

সেন্ডিকেট আর দলীয় প্রভাবে হাসপাতলটিতে রাজনীতির ছায়া পড়ে তার পুরনো যৌলস হারিয়ে ফেলেছিল। গত ৫ আগস্টের পর স্বাস্থ্য খাত সংস্কার সহ শেবাচিম হাসপাতালের সংস্কার দাবি উঠে সর্বমহলে।

হাসপাতালের ইতিহাসে এই প্রথম শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন পরিচালক হিসেবে এক জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কে পদায়ন করা হয়।

এর পর থেকেই শুরু হয় শেবাচিম হাসপাতাল পরিবর্তনের কাজ। ধীরে ধীরে গত ১ বছরে উন্নতির সেই চিত্র অনেকটাই দৃশ্যমান। সরকারী বরাদ্ধ তেমন না থাকলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তির মাধ্যমে হাসপাতালকে ভিন্ন রুপ দিতে তার এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছে সচেতন মহল।

ইতিমধ্যে ইমাজেন্সি এন্ড ক্যাজুয়ালটি বিভাগ চালু, আধুনিক মানের সিসিউ, আইসিউ, প্যাথলজি ল্যাব, রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র আধুনিকায়ন, আউট ডোর সেবাকে স্থান্তর করা, ওয়ার্ড গুলোকে ডেলে সাজানো সহ নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাকে অধিক উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়েছে।

প্রতিনিয়তই পাল্টে যাচ্ছে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। অভ্যন্তরীন থেকে শুরু করে বাহিরের আঙ্গিনায়ও সুন্দর্য ফুটে উঠতে শুরু করেছে। বট বৃক্ষ আর কৃষ্ণচুড়া গাছ বাতাশে দোল খাচ্ছে হাসপাতালের মাঠে। এক সময় এই কৃষ্ণচুড়ার লাল ফুলে রঙ্গীন হয়ে উঠবে হাসপাতালের আঙ্গীনা। তার মাঝে রঙ্গীন বাতিতে পানির ফোয়ারা যেন ভিন্ন রুপ দিয়েছে পুরো ক্যাম্পাসটিকে।

 

বর্তমান হাসপাতাল পরিচালকের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রতিটি কাজ সর্বমহলে প্রসংশা কুড়াচ্ছে।

তার সাথে এবার যোগ হলো আধুনিক মানের কেবিন ব্যবস্থা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য আধুনিক মানের বিলাসবহুল কেবিনের উদ্বোধন করেছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর।

মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় জড়ার্জিন কেবিন গুলোকে আধুনিকায়ন করে, রূপান্তর করা হয়েছে বিলাস বহুল কেবিনে।

মধ্য ও উচ্চবিত্ত রোগীদের কথা চিন্তা করে ২২টি কেবিন নতুন করে সাজানো হয়েছে। যার ভাড়াও থাকবে সকলের সাধ্যের নাগালে। এ রকমের আরও বেশ কিছু কেবিন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে বলে যানিয়েছে হাসপাতাল পরিচালক।

এ ছাড়াও হাসপাতালের নিচের আউট ডোরে বসা ডাক্তারদের রুমগুলোকে ডেলে সাজিয়ে করা হয়েছে ইউরোলজি চিকিৎসার ওয়ার্ড। যেখানে মূত্রতন্ত্র (কিডনি, মূত্রনালী, মূত্রাশয়, প্রোস্টেট) এবং পুরুষ প্রজনন অঙ্গের বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সাথে সম্পর্কিত চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। ইতিমধ্যে ওয়ার্ড টির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, সরকারী ভাবে তেমন একটা বরাদ্দ নেই যদি পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাওয়া যেত তাহলে এই হাসপাতালে মানুষ সর্বাধুনিক চিকিৎসে সেবা পেত। যতটুকু সম্ভব বিভিন্ন জনের মাধ্যমে করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, একটু সময় লাগবে পরিবর্তন তো দ্রুত সম্ভব নয়, সময়ের ব্যবধানে বেশ কিছু পরিবর্তন আরও হবে। তবে আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে যতটুকু যেভাবে সম্ভব হাসপাতালের উন্নয়নে কাজ করে যাব।

এদিকে গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহি প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম বলেন, বর্তমান পরিচালন শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। তার দিন নির্দেশনা মতে কি ভাবে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবাটা উন্নতি করা য়ায় সেভাবে আমরা তার সাথে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। বাজেট স্বল্পতা থাকার কারনে অনেক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তার পরও যা বরাদ্ধ পাওয়া যায় তা দিয়ে গনপূর্ত বিভাগ পাশে থাকার চেষ্টা করছে।

তিন আরও বলেন, আমরা বেশ কিছু নতুন কাজের পরিকল্পনা ইতিমধ্যে মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করেছি। সেই কাজগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে এই হাসপাতালে রোগীল ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।#

Leave A Reply

Your email address will not be published.