নিজস্ব প্রতিবেদক :
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ঔষধ সরবরাহসহ সর্ব সাধারণের জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু কার্যক্রম ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। হাসপাতালের রোগী সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে তিন ধাপে কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর।
বিগত ৮ মাসে সর্ব সাধারণের জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু কার্যক্রম ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হযেছে। আজ বুধবার (২৭ আগষ্ট) তিনি এক প্রেস বার্তার মাধ্যমে হাসপাতালে রোগী সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।
জানাগেছে, বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা ছাড়াও ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ কিয়দাংশ ও খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার অনেক রোগীসহ দেড় কোটি মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল। ১৯৭০ সালে হাসপাতালটি ৩২৪ শয্যায় রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ১৯৭৪ সালে ৫০০ শয্যায় উন্নীত হয়। ২০১৩ সালে ৫০০ শয্যার হাসপাতালটিকে ১০০০ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু জনবল ও অবকাঠামো পূর্বের ৫০০ শয্যা অনুযায়ী রয়ে গেছে। হাসপাতাল থেকে প্রতি বছর প্রায় ৭ লাখ রোগী চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকে। ৫০০ বেডের অবকাঠামোতে ৩০০০ এর বেশী রুগি চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সবচেয়ে বড় সমস্যা। তার মধ্যে সীমিত সম্পদ ও দক্ষ মানব সম্পদের স্বল্পতা, অপ্রতুল সরঞ্জামাদি ও অপর্যাপ্ত বাজেট। পি.ডব্লিউ.ডি কর্তৃক অপর্যাপ্ত বাজেট ও ৫০০ বেডের অবকাঠামোতে ৩০০০ এর বেশী রোগী চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সবচেয়ে বড় সমস্যা।
আজ বুধবার হাসপাতাল পরিচালকের বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রেরিত প্রেস বার্তায় তিনি উল্লেখ্য করেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে হাসপাতালের রোগী সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে যে সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে সেগুলো হলে, কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা ১০টি হতে বর্তমানে ২০টি মেশিনে উন্নীত করা হয়। এর মধ্যে ২টি মেশিনে সি-ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ডায়ালাইসিস করা হয়। আরো ৫ টি মেশিন ক্রয় প্রক্রিয়াধীন। আউটডোর ও ইনডোর এর প্রায় সকল রোগীর প্যাথলজি ও রেডিওলজি পরীক্ষা হাসপাতালেই করা হচ্ছে। সিটি স্ক্যান মেশিন পুনরায় চালু করা হয়েছে। বর্তমানে এন্ডোসকপি, কোলনস্কপি, ফাইব্রোস্ক্যান, ইভিএল, কিডনি বায়োপসি পরীক্ষা ও নেফ্রোলিথোটমি সহ কিডনি ও ইউরোলজির সব ধরনের অপারেশন নিয়মিত হচ্ছে। কার্ডিওলজি, রিউমাটোলজি, ইউরোলজি, ভাস্কুলার সার্জারি আউটডোর, এন্ড্রোক্রাইনোলজি, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি, নিউরো সাজারী, হেমাটোলজি ইনডোর চিকিৎসা চালু করা হয়েছে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ইউনিট (লিভার, কিডনি, হরমোন ও ডায়াবেটিস, বক্ষব্যাধি, পরিপাক তন্ত্র, নিউরো, রিউমাটোলজি ও গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি, হেমাটোলজি) চালু রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) থেকে ৭ সদস্যের কারিগরি টিম হাসপাতালে ৯৫টি অকেজো মেশিন সচল করেছে। অকেজো থেকে সচল হওয়া মেশিন গুলোর মধ্যে রয়েছে, ৬টি অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন, ২৫টি সাকশন মেশিন, ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর, ৫টি অটোক্লেভ, ১ টি সি-আর্ম মেশিন, ২টি মনিটার, ৮টি ওটি টেবিল, ৫ টি ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর, ১০টি হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা, ৫ টি আইসিইউ বেড, ৬ টি ওটি লাইট, ৫টি ডেন্টাল ইউনিট, ২টি ডায়াথার্মি মেশিন, ৪ ইসিজি মেশিন ও ১টি এক্সরে মেশিন। আরো ২০টি মেশিন সচলের কার্যক্রম চলছে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এর বর্ধিত সভায় রোগীদের অসন্তোষ্টের মূল জায়গা মেডিসিন বিভাগ মূল ভবনে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উক্ত স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই ভবনের নীচ তলায় মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনি বহির্বিভাগ স্থানান্তর করে চালু করা হয়েছে।
পর্যায় ক্রমে (সেপ্টেম্বরের মধ্যে) ওই ভবনে সকল বহির্বিভাগ স্থানান্তর করে চালু করা হবে। ফলে পুরাতন ভবনটি পুরোপরি ইনডোর ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হবে। রোগীদের সুবিধার্থে নতুন আউটডোর ভবনে টিকেট কাউন্টার ও ডিসপেনসারি চালু করা হয়েছে।
হাসপাতালে অতিরিক্ত দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণের জন্য দর্শনার্থী কার্ড প্রাথমিক ভাবে চালু করা হয়েছে। পরবর্তীতে পুরো হাসপাতাল দর্শনার্থী কার্ডের আওতায় আনা হচ্ছে। রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালে সকল স্বেচ্ছাসেবী ট্রলি ম্যানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নতুন ৪৬ জন জনবল প্রাপ্তির পর বর্তমানে ট্রলি ম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সরকারি স্টাফদের। ১২. অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট উৎখাত করা হয়েছে। বেসরকারি কোনো অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান করতে পারবে না। রোগী নিয়ে আসলে তাদের নামিয়ে দিয়ে দ্রুত হাসপাতাল চত্বর ত্যাগ করতে হবে। হাসপাতাল অভ্যন্তরে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করে রোগী ধরতে পারবে না বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। এর বিপরীতে সরকারি ৭টি অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করা হয়েছে জরুরি বিভাগের সামনে। পাশাপাশি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া তালিকা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে জরুরি বিভাগে। হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পেতে ০১৭৮২৭৫৫৫০০ নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। হাসপাতালর ল্যাব সম্প্রসারণসহ সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সকল কাউন্টারে অটোমেশন চালু করা হবে। হাসপাতালে রোগী বহনের সকল পুরাতন ট্রলি মেরামত ও নতুন করে আরো ১০টি ট্রলি প্রদান করা হয়েছে। ৭টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। এই মনিটরিং টিম বিকাল ও রাতে হাসপাতালের বহিঃ ও অন্তঃ বিভাগে মনিটরিং করেছেন। এই কাজে উচ্চ পর্যায়ে আরো ৫টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে ১০০টি সিলিং ফ্যান লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে যা আরো বাড়ানো হবে। হাসপাতালের সিসিইউ ভবন সংস্কারের ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আধুনিক সিসিইউ ওয়ার্ড রোগী সেবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। হাসপাতালের ২য় তলা শিশু ওয়ার্ডে কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে যা সম্পূর্ণ করা হবে। গাইনি ওটি, বিশেষায়িত ওটি চালু করা হয়েছে। বিশেষায়িত ওটি তে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে নিউরো নিউরো সার্জারি অপারেশন করা হচ্ছে। হাসপাতালে নতুন ভাবে আধুনিক মানের মানসিক বিভাগ চালু করা হয়েছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগের আউটডোর রোগী জন্য খাবার পানির একাধিক ফিলটার বসানো হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালের সামনে পুরাতন খাবার পানির ২টি ট্যাংকি মেরামত কাজ করা হয়েছে। হাসপাতালের ৫ম তলায় ২২টি কেবিন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। যাহার ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে কেবিন গুলো রোগী সেবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। হাসপাতালের সকল টয়লেট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে অস্থায়ী ভাবে ৯০ জন হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা নিয়মিত ভাবে জারি থাকবে। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে বিন বসানো হয়েছে ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। হাসপাতালের মেঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা উন্নয়নের নিমিত্তে ৮টি অটোমেটিক মেশিন চলমান আছে। আরো ৭ টি অটোমেটিক মেশিন আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ চলে আসবে। হাসপাতাল জীবানুমুক্ত রাখার জন্য ২০টি ন্যানো স্প্রে মেশিন আনা হয়েছে। যা চলমান আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের ১০০টি টয়লেটের দরজা ও জানালা মেরামত ও পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে নতুনভাবে আরো ১০০টি বেড ক্রয় করা হয়েছে। যা মেডিসিন ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রদান করা হবে। অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ১৮টি অতিরিক্ত বেড দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে রোগীর দালাল, বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধি, হকার ছদ্মবেশে হাসপাতালে প্রবেশকারীদের দেখা মাত্রই ধরে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য দালাল, প্রতারক ও হকারকে আটক করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাসপাতালের এলাকায় এবং এলাকার সামনের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বিগত ৩ মাস থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ভবনে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করত: ঔষধ ও অন্যান্য দ্রব্যাদি মান সম্মত ভাবে সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে অবাধে প্রবেশ প্রতিহত করা হয়েছে। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কয়েক দফা আটক করে পরবর্তীতে তাদের কর্তৃপক্ষ এসে মুচলেকা দিয়ে নিয়ে গেছে যা চলমান থাকবে। হাসপাতাল থেকে মেঘনা ব্যাংক অপসারণের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের মেঘনা ব্যাংক নতুন ভবন থেকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই স্থলে বহির্বিভাগের ঔষধ বিতরণ কেন্দ্র করা হবে। ফলে রোগী সেবার জায়গা বৃদ্ধি পাবে। বিগত এক মাসে ডাক্তার, নার্স, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিসহ আউটসোর্সিং জনবলের অনেকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যা চলমান থাকবে। অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড মাস্টার ও একাধিক স্টাফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্তের গঠিত কমিটির তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ বাক্স বসানো হয়েছে। অভিযোগ সংগ্রহ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে নষ্ট লিফট মেরামতসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গণপূর্ত বিভাগ বেশ কয়েকটি লিফট মেরামত করেছে। পাশাপাশি লিফট ম্যানদের নির্ধারিত পোশাক বিতরণ করা হয়েছে। হাসপাতালে ৮০ টন নতুন এসি এবং ল্যাব এর জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পূর্ণ সার্ভিস ক্যাবল লাগানো হয়েছে। রোগী ও স্বজনদের সাথে ভাল ব্যবহারসহ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য সকল নার্সদের সতর্ক করা হয়েছে। গত ৭ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখ হাসপাতালের সকল নাসিং ইনচার্জ এর সাথে জরুরি সভায় এই সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের সকল নার্স ও স্টাফদের নির্ধারিত পোশাক বিতরণ করা হয়েছে। নির্ধারিত পোশাক পরিধান ও পরিচয় পত্র বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ৩৯. আউটসোর্সিং জনবল, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী এবং সিনিয়র স্টাফ নার্সদের পুনঃবিন্যাস শুরু হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ হলে গোপন সিন্ডিকেট থাকবে না। ওটিতে অপারেশনের সময় হয়রানি কমানোর জন্য হাসপাতালের নিজস্ব ওটি লিস্ট বানানো হচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে যা সম্পূর্ণ হবে। হাসপাতালে বৃক্ষ রোপণ ও সবুজায়ন প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরের সৌন্দর্য বর্ধনে হাসপাতালের মূল ভবনের সামনে ফুলেল বাগান, ওয়াকওয়ে, বসার স্থান ও প্রধান ফটক এবং রাস্তার প্রশস্তকরণ করা হয়েছে। মূল গেটের সামনে ২টি পানির ফোয়ারা নির্মাণ করা হবে। হাসপাতালের ভবন গুলো ৫৮ বছরের পুরাতন হওয়ায় ছারপোকা ও তেলাপোকার বিস্তার রোধে পেস্ট কন্ট্রোল শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ হাসপাতাল পেস্ট কন্ট্রোল শেষ করা হবে। মডানাইজেশন ভবনে আধুনিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপন করা হবে। হাসপাতালের লিলেন প্লান্ট আধুনিকায়ন করণ শুরু হয়েছে। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পাদন করা হবে। ফলে রোগীরা আরো পরিষ্কার ও মান সম্মত কাপড় পাবে। ৪৫. বর্ধিত বাজেট অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন।
প্রেস বার্তায় পরিচালক আগামী ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে হাসপাতালের রোগী সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে যে সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে ও পরিকল্পনা এবং চাহিদা রয়েছে উল্লেখ্য করেছেন। মধ্য মেয়াদী কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশে অক্টোবর/২৫ এর মধ্যে ৩,০০০ চিকিৎসক পদায়ন করা হবে, সেপ্টেম্বর/২৫ এর মধ্যে ৩,২০০ নার্সদের নতুন করে চাকুরি দেয়া হবে এবং অক্টোবর/২৫ মাসে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে প্রোমোশন দেয়া হবে। এদের মধ্যে অন্য মেডিক্যালের তুলনায় আমাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল বেশী চিকিৎসক ও নার্স পদায়নের আশ্বাস পাওয়া গেছে। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা আরো জোরদার করার জন্য নতুন করে আরো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের চাহিদা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে নির্মাণাধীন ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদ্রোগ চিকিৎসা কেন্দ্রের কাজ নির্মাণ দ্রুত শেষ করে হস্তান্তর করা হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ৬ মাসের মধ্যে শিশু ওয়ার্ড শিশু হাসপাতালে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। চলমান অর্থ বছরে এম আর আই ও ক্যাথ ল্যাব বরাদ্দ পাওয়া যাবে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্টাফদের জন্য একটি বড় মোটর সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ করা হবে। নতুন ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় ৫০ বেডের আইসিইউ এর কাজ চলমান। আগামী বছরে জানুয়ারি নাগাদ হস্তান্তর হতে পারে। ক্রমবর্ধমান রোগীর চাপ সামলানোর জন্য নতুনভাবে আরও ১০০ জন আউটসোর্সিং জনবল প্রয়োজন। যাহার চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর আগামী ১ বছরের অধিক সময় হাসপাতালের রোগী সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে যে সকল চাহিদা ও দাবি এবং পরিকল্পনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছেন। তার দীর্ঘ মেয়াদী কর্ম পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, ২৫০০ শয্যার অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ, হাসপাতালের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে ১০০০ শয্যা হাসপাতালটিকে ৩০০০ শয্যায় উন্নীতকরণ উদ্দেশ্য পুরাতন ৫ তলা ভবনটি পর্যায়ক্রমে ২০ তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, ১০ তলার ভিত্তি প্রস্থের উপর ৫ তলা পর্যন্ত নির্মিত নতুন মেডিসিন ভবনটি ৬ থেকে ১০ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ, মডেলে ফ্যামিলি প্লানিং ভবনের স্থলে ২০ তলা ভবন নির্মাণ করা, ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ১০০ শয্যার ভৌত অবকাঠামো, ওটি ও পোস্ট অপারেটিভ ব্লক তৈরি, অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করার জন্য স্যাড তৈরি, শয্যা অনুযায়ী পদ সৃজন করে সচল পদে পদায়ন ও নিয়োগ নিশ্চিত করা, হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। হাসপাতালে সেবাদানকারীর তুলনায় অতিরিক্ত রোগীর চাপ কমাতে শুধু মাত্র জেলা বা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে রেফার্ড রোগী ভর্তি নেয়া, মারামারি বা ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট রোগী প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও বরিশালের রোগীদের সদর হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সর্বোপরি রেফার্ড মাধ্যমে এই হাসপাতালে ভর্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।