হেলথ ইনফো ডেস্ক :
গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে বোমাবর্ষণের ঘটনায় নতুন করে ক্ষোভে ফুঁসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি তুলেছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক বিশ্লেষকেরা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) তুরস্কভিত্তিক আনাদোলু এজেন্সি ও যুক্তরাজ্যের দ্য মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মাঝেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অন্তত ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে। এতে একদিনেই প্রাণ হারান ৪৪ জন, আহত হন আরও ২৩০ জন ।
সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে দেওয়া বক্তব্যে এসব তথ্য স্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গর্বের সুরে তিনি জানান, ‘যুদ্ধবিরতির মাঝেও দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ায় আমরা জবাবে গাজায় হামলা চালিয়েছি।’
নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্যকেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের শামিল। আন্তর্জাতিক আদালতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলার মাঝেই এমন কাণ্ড তাকে আরও বিচারের মুখে ফেলতে পারে।’
জাতিসংঘের কয়েকজন বিশেষ দূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরাও বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র বিক্রি বন্ধসহ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।
ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজা সীমান্তবর্তী রাফায় হামাসের হামলায় তাদের দুই সেনা নিহত হয়েছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং চুক্তি লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত নয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ দুই বছর পেরিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৮ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৭০ হাজার ২০০ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বলা হয়, গত এক সপ্তাহে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে অন্তত ৮০ বার।