নিজস্ব প্রতিবেদক :
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ আই হসপিটালে চোখে ময়লা নিয়ে আসা এক শিশুর এক চোখ রেখে অন্য চোখে অপারেশনের বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়ে পরে সমস্ত দেশে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চিকিৎসক গ্রেপ্তার হন।
কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায় শিশুটির চোখে কোন অপারেশন হয়নি। মাত্র ১৮ মাস বয়স হওয়ায় তাকে অজ্ঞান করে দুই চোখ থেকেই ময়লা বেড় করে ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পরে।
প্রকাশিত/ প্রচারিত সংবাদ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আই হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট লিঃ এর ব্যাখ্যা :
সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ আই হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট এ রোগীর “ভুল চক্ষু অস্ত্রপচার” ঘটেছে বলে রোগীর স্বজনদের দ্বারা দাবি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে রোগীর সাথে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য সম্পূর্ন ভিত্তিহীন ও প্রকৃত ঘটনাকে সম্পূর্ন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালের নির্বাহী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত তদন্ত কমিটি ১৫ই জানুয়ারী, ২০২৫ ইং তারিখে দুপুর ৩:৩০ ঘটিকার সময় একটি মিটিং এর আয়োজন করেন। উক্ত মিটিং এ শিশুটির চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষ্যগ্রহন করেন। উক্ত তদন্ত কমিটি প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন যে, গত ১৪ই জানুয়ারী, ২০২৫ ইং তারিখে ইরতিজা আরিজ হাসান নামে ১৮ মাস বয়সী একজন শিশু রোগী চোখের চিকিৎসার জন্য শিশু চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সাহেদ-আরা বেগম, কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ আই হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট এর নিকট আসেন এবং তিনি চোখের পাতার নীচে ফরেন বডি (চোখের পাপড়ি) ও Corneal Abrasion এর অস্থিত্ব খুজে পান এবং যা চোখের কর্ণিয়ার ক্ষতির কারণ হতে পারে বিধায় তা বের করে আনার পরামর্শ প্রদান করেন।
উক্ত চিকিৎসাটি কোন অস্ত্রপচার ছিলো না। ছোট শিশু, তাই আউটডোরে এর চিকিৎসা সম্ভব নয় বিধায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান Examination under Anesthesia দিয়ে সম্পূর্ণ চিকিৎসা করার জন্য। তিনি দুই চোখ পরীক্ষা করে প্রথমে ডান চোখ থেকে চোখের পাপড়ি সরিয়ে দেন। পরবর্তীতে শিশুটির মা-বাবার কথার ভিত্তিতে বাম চোখ পুনরায় পরীক্ষার জন্য অপারেশন রুমে নিয়ে যান এবং বাম চোখ থেকেও চোখের পাপড়ি বের করেন। চোখের উপরিভাগের ঘর্ষনজনিত সমস্যা (Corneal Abrasion) হতে দ্রুত নিরাময়ের জন্য ওই শিশুটির চোখ ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। এটি এই ধরনের চিকিৎসার স্বীকৃত ও প্রচলিত পদ্ধতি, যা কোন অস্ত্রপচার বা অপারেশন নয়। পরবর্তী চিকিৎসা ব্যাবস্থা যথাযথ অনুসরন করা হলে শিশুটির চোখের কোন সমস্যা হবে না।
চিকিৎসার সাথে সাথে শিশুটির সাথে থাকা মা-বাবাকে পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর মা-বাবা এবং আত্মীয়স্বজন চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পুরো অংশটি বুঝতে ভুল করেন। তারা পরবর্তীতে তদন্ত কমিটির কাছে কোন অভিযোগ না দিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন যে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশুটির চোখে ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। অথচ তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তারা আসতে বা সহায়তা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে তারা বাংলাদেশ আই হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট এর মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে যা যা বলেছেন তা ভিত্তিহীন এবং অপপ্রচারের সামিল।
বাংলাদেশ আই হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং মান সম্মত চিকিৎসা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই বিষয়ে বা অন্য যেকোন বিষয়ে আরও প্রশ্ন থাকলে বা সঠিক তথ্য প্রয়োজন হলে দয়া করে আমাদের অফিসিয়াল প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।