বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
বিদেশি চিকিৎসক স্বাস্থ্যসেবা দিতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমতি নিতে হবে। এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত পদ্ধতি। অনুমতি ছাড়া চিকিৎসা সেবা দেওয়া বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘স্বাস্থ্য সেবায় গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এসব কথা বলেছেন।
রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরসহ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, অনুমতি ছাড়া চীন-মেত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিদেশি চিকিৎসকদের এক্সপোটা বন্ধ করেছিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সিভিল সার্জন গিয়ে বন্ধ করেছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, পৃথিবীতে স্বীকৃত পদ্ধতি হলো—বিদেশি চিকিৎসককে সেবা দিতে অস্থায়ী লাইসেন্স নিতে হয়। সেটা অল্প সময়ের জন্যও হতে পারে, আবার সেটা এক বছর, দুই বছর মেয়াদেরও হতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগের হাসপাতাল হলে বিনিয়োগের সুবাদে তারা সেখানে লম্বা সময়ের অনুমতি পান। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এক্সপোতে আসা চিকিৎসকরা অনুমতি নিয়েছেন কিনা? এই প্রশ্ন উত্থাপন হওয়া দরকার।
বিদেশি চিকিৎসকরা দুইভাবে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ পান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁরা দুইভাবে আসেন। বিদেশি বিনিয়োগের হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া চিকিৎসকের সুযোগ পাওয়ার পদ্ধতি এক রকম। ব্যক্তিগতভাবে এলে তার পদ্ধতি আরেক রকম। তবে দুই ক্ষেত্রেই অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া চিকিৎসা সেবা দিলে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অতএব অনুমতি ছাড়া কোনো বিদেশি চিকিৎসক আমাদের আওতার মধ্যে চিকিৎসা দিলে শাস্তি প্রয়োগ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে তাঁর নিজ দেশের রেগুলেটরি বডির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে অবহিত করা যাবে যে, তিনি বিনা অনুমতিতে বাংলাদেশে এসে প্রফেশনাল প্র্যাকটিস করেছেন।’
সুনিদির্ষ্টি রেফারেল সিস্টেম না থাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে গিয়ে রোগীদের খরচ বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে এখনো পেশাগত ফি নির্ধারিত হয়নি। দরিদ্র রোগীর স্বার্থে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। তবে মূল সমস্যা হলো, রেফারেল সিস্টেম না থাকায় রোগীরা সরাসরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। এতে খরচ অকারণে বেড়ে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে রোগের প্রতিষেধক হিসেবে বিবেচিত কোনো জিনিসের বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না বলে জানান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান। বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্য বা যে কোনো জিনিস যখন রোগ সারাতে সক্ষম হবে, তখন একে ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তখন কেউ সামাজিক যোগাযোগ বা কোনো মাধ্যমে এ নিয়ে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন না। বাংলাদেশে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট আইন আছে। প্রযুক্তির সহায়তায় খুব সহজে এ বিজ্ঞাপন বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হবে। খুব দ্রুতই এ নিয়ে দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখতে পাবেন।
বিশেষ সহকারী বলেন, ওষুধের দাম নির্ধারণে সরকার কোনো ধরনের হোস্টাইল অবস্থান নিতে চায় না। তবে বিশ্বমানের অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে, যুক্তি ও ন্যায়ঙ্গত মুনাফার সুযোগ রেখে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে রোগীদের জন্য দাম নির্ধারণ করা হবে।