Take a fresh look at your lifestyle.

বরিশাল বিভাগে বাড়ছে জলাতঙ্ক রোগ : আক্রান্ত ১০ হাজারের বেশি

৮৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী ভাইরাস ঘটিত রোগ যা মূলত কুকুর, শিয়াল ও বেজীর মতো প্রাণীর মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে এর ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে, যার ফলে লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর প্রায় কোনো রোগীই বাঁচতে পারেন না।

দক্ষিণাঞ্চলে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে প্রাণঘাতী এই জলাতঙ্ক রোগ। পোষা প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বাড়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সর্বত্র।

চলতি বছরের নয় মাসেই বরিশাল বিভাগে ১০ হাজার ৮৫১ জন মানুষ জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সম্প্রতি ঝালকাঠিতে কাজী মনিরুজ্জামান মান্না নামে এক যুবকের জলাতঙ্কে মৃত্যু স্থানীয়দের মধ্যে ভীতি বাড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রামক এ রোগ থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তি ও পরিবার পর্যায়ে সচেতনতার বিকল্প নেই। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিভাগজুড়ে আক্রান্তের চিত্র:
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ মাসে বরিশাল জেলায় ৩ হাজার ৮৭৭জন, বরগুনায় ১ হাজার ৪৩৫ জন, ভোলায় ১ হাজার ৬৭১ জন, ঝালকাঠিতে ৭৬৩ জন, পটুয়াখালীতে ১ হাজার ১১৭ জন এবং পিরোজপুরে ৯৯৪ জন জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১০,৮৫১ জন যা গত কয়েক বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

হাসপাতালে ভ্যাকসিনের চাপ:
মঙ্গলবার সরেজমিনে বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালে দেখা গেছে, জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিতে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন রোগীরা। প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিন’শ রোগী ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।

চিকিৎসকের সতর্কবার্তা:
বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল মানবকণ্ঠকে বলেন, ‘অনেকেই পোষা প্রাণী রাখেন কিন্তু তাদের ভ্যাকসিন দেন না। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে নিজে বাঁচুন, সমাজকেও বাঁচান।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি। পোষা প্রাণীদের বছরে অন্তত একবার টিকা দেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং গণসচেতনতামূলক প্রচার বাড়াতে হবে।
জলাতঙ্কে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে, ফলে সচেতনতা, সময়মতো ভ্যাকসিন গ্রহণ এবং পোষা প্রাণীর টিকাদানই এখন সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
‘প্রতিরোধই জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়’ এই বার্তাই এখন সময়ের দাবি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.