Take a fresh look at your lifestyle.

ঢামেকে নিউরোসার্জারি বিভাগের অধস্তন নারী চিকিৎসককে অশোভন মন্তব্য, দেড় ঘণ্টা বন্ধ ছিল অপারেশন

৫৮

হেলথ ইনফো ডেস্ক :

এমন পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রুটিন অপারেশন পুনরায় শুরু হয়। তবে ইমারজেন্সি অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল বলে জানা গেছে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের অশালীন ও অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে দেড় ঘণ্টা রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখেন অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগে চিকিৎসকরা। পরে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে চিকিৎসকরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান।

সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখেন অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। ১০টার দিকে হাসপাতালের পরিচালকের সাথে একটি বৈঠক শেষে কাজে ফেরেন তারা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মেডিক্যালের অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের ফেজ-এ রেসিডেন্ট ডা: নুসরাত নওশিন নওরিন গত (১ নভেম্বর) নিউরো সার্জারি বিভাগে হোয়াইট ইউনিটে যোগদানের পর ইউনিট প্রধান ডা: শামসুল ইসলাম খানের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে একের পর এক অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক মন্তব্য করেন। পরে সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে এনেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা একযোগে প্রতিবাদে অংশ নেন।

ডা: মঞ্জুরুল ইসলাম নামের এক সহকর্মী জানান, সকাল ৮টা থেকে আমরা সবাই প্রতিবাদ জানাই এবং প্রিন্সিপাল স্যার ও ডিরেক্টর স্যারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিই। সেখানে এনেস্থেসিয়া সোসাইটি নেতারা নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধানসহ ঢাকা মেডিক্যালের সিনিয়র শিক্ষক ও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী অধ্যাপক ডা: মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান জানান, সভায় সবাই একমত হয়ে ডা: শামসুল ইসলাম খানকে ঢামেকের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিচালক ও প্রিন্সিপাল মহোদয় বিষয়টি উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন, যাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। একইসাথে বিএমডিসিতে তার নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া এনেস্থেসিয়া সোসাইটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়, তাকে সরকারি-বেসরকারি কোনো অপারেশন থিয়েটারে সহযোগিতা করা হবে না।

এমন পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রুটিন অপারেশন পুনরায় শুরু হয়। তবে ইমারজেন্সি অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা: মো: আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

ডা: নওশিনে অভিযোগপত্র অনুযায়ী আরো জানান যায়, গত ১ নভেম্বর তিনি একাডেমিক কারিকুলাম অনুযায়ী নিউরোসার্জারি বিভাগের হোয়াইট ইউনিটে যোগ দেন। যোগদানের পর সহযোগী অধ্যাপক ডা: মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অপমানজনক ভাষায় মন্তব্য করতে থাকেন।

অভিযোগে বলা হয়, অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের ‘কুকুরের জাত’ বলে বারবার সম্বোধন করেন এবং নির্দিষ্ট চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে গালিগালাজ করেন। এমনকি সহকর্মী চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও অশোভন মন্তব্য করেন।

অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ রয়েছে, ডা: শামসুল ইসলাম খান অ্যানেস্থেসিওলজি পেশাকে ‘নিম্নমানের ও নির্ভরশীল সাবজেক্ট’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন এবং একপর্যায়ে ব্যক্তিগতভাবে অপদস্থ করার মতো ভাষা ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় সহকর্মীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত প্রতীকী কর্মবিরতিতে রূপ নেয়।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.