Take a fresh look at your lifestyle.

ডাক্তার বাবার গোমর ফাঁস করলেন দুই মেয়ে

১০৪

বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা জেলা সভাপতি ও নাগরিক নেতা ডা. বাহারুল আলমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার দুই মেয়ে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা অভিযোগ করেন, ৩৬ বছর আগে তাদের বাবা পরিকল্পিতভাবে মাকে হত্যা করেন। মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর তারা আদালতে মামলা করেছেন। এরপর ডা. বাহারুল অনৈতিক সম্পর্ক ও অন্য নারীর প্ররোচনায় তাদের দুই বোনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি এবং পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড থেকে তাদের অপসারণসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাবার বিরুদ্ধে নৈতিক আস্ফালন, অন্য ধর্মের নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, স্বাক্ষর জাল করে ফ্ল্যাট বিক্রি ও ঋণ নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন দুই মেয়ে। অবশ্য ডা. বাহারুল আলম সংবাদ মাধ্যমে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ডা. বাহারের বড় মেয়ে শেখ তামান্না আলম। তিনি এপিসি ফার্মাকিউটিকলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ সময় ছোট মেয়ে ডা. তাসনুভা আলম উপস্থিত ছিলেন। তিনি কোম্পানির পরিচালক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা. বাহারুল আলমের বড় মেয়ে শেখ তামান্না আলম বলেন, আমার পরিবারের মধ্যে কয়েক বছর ধরে চরম অস্থিরতা এবং বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দুঃখজনকভাবে বিনা দ্বিধায় বলতে হচ্ছে, আমার বাবার সঙ্গে একজন বিবাহিতা ভিন্ন ধর্মের নারীর অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। যা আমাদের পুরো পরিবারকে সামাজিক, মানসিক এবং নৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে।

তিনি বলেন, আমার মা ডা. শামসুন্নাহার ১৯৮৯ সালে ১৩ নভেম্বর মারা যান। মা মারা যাওয়ার সময় আমি এবং আমার ৭ বছরের ছোট বোনকে রেখে যান। আমার বয়স ছিল তখন মাত্র ১৪ বছর। বাবার অনেক অন্যায় চোখের সামনে দেখেও ছোট বোনের কথা চিন্তা করে কোনো প্রতিবাদ করিনি। আজ এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, এখন একজন অন্য ধর্মের নারী, তার স্বামী সংসারসহ শুধু অর্থের লোভে আমার বাবাকে আমাদের থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়েছে। ওই নারী আমাদের প্রতিষ্ঠানে ১৩০০ টাকা বেতনের একজন কর্মচারী ছিলেন। আমার বাবার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ওই নারী একই প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালক হয়েছেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও বাবার বন্ধুমহলেও বহুবার সমাধান ও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। উল্টো ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে আমি ও আমার বোনের প্রতিটি দিন কাটছে আতঙ্ক নিয়ে। আমার বাবার সহযোগিতায় হেনা রানী ভৌমিকের স্বামী বিভিন্ন সময় আমাদের বাসায় এসে আমাদের কর্মচারীদের সামনেই আমাদের দুই বোনকে অকথ্য ভাষায় প্রায়ই গালিগালাজ করে। অব্যাহত হুমকির মুখে সোনাডাঙ্গা থানায় আমরা জিডি করেছি।

সংবাদ সম্মেলনে তামান্না বলেন, ডা. শেখ বাহারুল আলম নিজ বাসা ও বিএমএ ভবন ব্যবহার করে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ তার একটি নেশা। তিনি এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে ইনভেস্টর হিসেবে সম্পর্ক তৈরি করে তাদের অর্থ ইনভেস্ট করান এবং পরবর্তীতে তাদের টাকা আত্মসাৎ করে থাকেন। আমি বাধা দিলে আমাকে এমডি পদ বাতিল এবং লিখিত জবাব দিতে হয়েছে। এ ঘটনায় স্মার্ট এগ্রো বিডির স্বত্বাধিকারী মিসেস লুবনা জাহান তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা চলমান রয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, আমি কানাডায় থাকা অবস্থায় আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আমমোক্তার নামা তৈরি করে আমার ঢাকাস্থ একটি ফ্ল্যাট তার নামে লিখে নিয়ে এ বছর ৭০ লাখ টাকা বিক্রি করছেন। আমার বোন ডা. তাসনুভা আলমের স্বাক্ষর জালিয়াতি ও আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আমমোক্তার নামা তৈরি করে ২০২১ সালে পূবালী ব্যাংক হতে আমার বোন ও আমার নামে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। এ বিষয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমি ও আমার বোন তার বিরুদ্ধে পৃথক ২টি জালিয়াতি মামলা করেছি।

বর্তমানে ডা. শেখ বাহারুল আলম হেনা রানী ভৌমিককে এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ১০ হাজার শেয়ার লিখে দিয়েছেন, যা কোম্পানি আইন বহির্ভূত।

বিষয়টি নিয়ে একটি গণমাধ্যমে দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে ডা. বাহারুল আলম অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, ১৯৮৯ সালে সুইসাইডাল নোট রেখে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত। মেয়েদের উচ্ছৃংখল আচরণের কারণে কোম্পানির পরিচালকরা এমডিকে অপসারণ করেছে।

তিনি বলেন, এই শহরের বেশিরভাগ মানুষ আমাকে চেনে, আমার সম্পর্কে জানে। এমন অভিযোগ গত ৪০ বছরে কেউ তোলেনি। মেয়েরা যা বলেছে, কোনোটিই সত্য নয়। প্রতিটির প্রমাণ আমার কাছেও রয়েছে। তারা যেভাবে বলছে, আমি তো তাদের বিপক্ষে এভাবে বলতে পারি না। সময় করে আসলে সব দেখাতে পারবো।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট

Leave A Reply

Your email address will not be published.