Take a fresh look at your lifestyle.

টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে দেশের ৯৭ শতাংশ শিশুকে : ইউনিসেফ

৪৭

হেলথ ইনফো ডেস্ক :
বাংলাদেশে ৯৭ শতাংশের বেশি শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটির প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্সকে উদ্ধৃত করে ইউনিসেফ এ তথ্য জানায়।

ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, আজ একটি দারুণ খবর জানাতে পেরে আমি গর্ব ও আনন্দ বোধ করছি। বাংলাদেশ একটি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন ২০২৫-এর মাধ্যমে ৯৭ শতাংশের বেশি শিশুর কাছে পৌঁছানো গেছে, যার ফলে চার কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশু সুরক্ষা পেয়েছে।

তিনি বলেন, এই অসামান্য অর্জন প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ সরকার শিশুদের প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ও কষ্ট থেকে সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি সন্তান গুরুতর অসুস্থ হলে পরিবার যে অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপে পড়ে, সেখান থেকেও পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে টাইফয়েড প্রতিরোধে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশগুলোর কাতারে উঠে এসেছে। জীবনরক্ষাকারী এ ক্যাম্পেইন চালু করা বিশ্বের অষ্টম দেশ হলো বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, এই টিকা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন শিশুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা সর্বশেষ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভেতে (এমআইসিএস) দেখা গেছে, বাংলাদেশে মাত্র ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষের নিরাপদ ব্যবস্থাপনার আওতায় পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, পানির সব ধরনের উৎসের প্রায় অর্ধেক (৪৭ দশমিক ২ শতাংশ) এবং প্রতি ১০টির মধ্যে আটটি পরিবারে ব্যবহৃত পানির নমুনায় (৮৪ দশমিক ৯ শতাংশ) ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া দূষণ রয়েছে।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, এ সংখ্যাগুলো প্রমাণ করে যে লাখ লাখ শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিদিন তারা এই ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে, এবং সাধারণ একটি গ্লাস পানিও তাদের জন্য গুরুতর বিপদ ডেকে আনতে পারে।

ইউনিসেফ জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে এ ক্যাম্পেইন শুরু করতে সহায়তা করেছে। প্রতিটি পরিবারের জন্য পরিষ্কার ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত—শিশুদের গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দেওয়া, তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখা এবং বাবা-মায়েদের মানসিক চাপ কমানোর জন্য—টিসিভি টিকা অন্যতম শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, টিকাদানে উৎসাহিত সাড়া দেওয়ার জন্য আমি অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। টিকাদানের লক্ষ্য অর্জনে সফল হওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দেশের অসাধারণ কর্মীদলকে আমি অভিনন্দন জানাই।

রানা ফ্লাওয়ার্স আরও বলেন, এই যাত্রার প্রতিটি ধাপে সহায়তা করতে পেরে ইউনিসেফ গর্বিত। ৫ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিসিভি টিকা সরবরাহ করা থেকে শুরু করে শক্তিশালী পরিকল্পনা প্রণয়ন, নতুন কোল্ড রুম নির্মাণের মাধ্যমে কোল্ড চেইন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সঠিক সময়ে সঠিক শিশুর কাছে টিকা পৌঁছে দিতে ভ্যাক্সইপিআই ও বিভিন্ন ডিজিটাল সরঞ্জামের ব্যবহারের ক্ষেত্রেই ইউনিসেফ সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।

তিনি আরও জানান, এত বড় একটি জাতীয় ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ইউনিসেফ সহায়তা করেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.