Take a fresh look at your lifestyle.

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিএমইউর অগ্নিসংযোগের মামলায় ডা. সুমিত সাহা গ্রেপ্তার

22

 

বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) অগ্নিসংযোগের মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ডা. সুমিত সাহাকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ১০ টায় বিএমইউর সামনে থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্রজনতা।

আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর মেডিভয়েসকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। একই সাথে ‍সুমিত সাহাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডা. সুমিত সাহা বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদ। কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্রলীগ-সমর্থিত মেডিসিন ক্লাবের সভাপতিও ছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার নেতৃত্বাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ৪ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগে বিএমইউতে (তৎকালীন বিএসএমএমইউ) আক্রমণ চালায় আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)। ওই দিন এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা ছাড়াও অগ্নিসংযোগ করা হয় একাধিক গাড়িতে। পরে তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মামলার বিবরণে বলা হয়, ৪ আগস্ট আনুমানিক সকাল ১০টায় শাহবাগ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করছিলেন। সে সময় বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ভিতরে ১ নম্বর গেটের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও তৎকালীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানসহ বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।

সে সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা পাল্টা স্লোগান দিলে প্রশাসনিক ভবনের ভিতর থেকে এবং ছাদের উপর থেকে প্রায় ২৫-৩০ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী মিলে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও ভারী বস্তু নিক্ষেপ করতে থাকেন। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে অনেক আন্দোলনকারী মারাত্মকভাবে জখম হন, যা ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে প্রমাণিত।

বিবাদীরা ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আক্রমণ করে প্রাণনাশের চেষ্টা করেন। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাখা সাধারণ মানুষসহ হাসপাতালের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হিসেবে চিহ্নিত।

ঘটনার দিন আরও দেখা যায়, ১ নম্বর গেটের ভিতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০-৩৫টি গাড়ি ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলা হয়। এছাড়াও কেবিন ব্লকের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়। এখনও ক্যাম্পাসের ভিতরে পোড়া বাসগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়, ওই দিন কতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই দিনের ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই দিনের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষীদের সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয় এবং তার প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রদান করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে থাকা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মারামারি, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, লুটতরাজ, প্রাণনাশের প্রচেষ্টা, ছাত্রদের মারাত্মকভাবে জখম করা এবং জ্বালাও-পোড়াও কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.