Take a fresh look at your lifestyle.

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে আস্থার প্রতীক ডা. শাওন বিন রহমান

১৫৯

হেলথ ইনফো ডেস্ক :
ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। এক বছর হয়ে গেল জরুরি বিভাগের দায়িত্ব পালনের। ওনার কাজের গুনে হাসপাতালে চিকিৎসকসহ সবার চোখে তিনি শুধু চিকিৎসক নন, একজন আস্তার প্রতীক, ভরসার স্থল। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা ওনাকে ফোনে কেউ পায়নি এমন কোনো রেকর্ড নেই বলেও জানিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরাও।

ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র স্টাফ বলেন, চাকরি জীবনে কখনো দেখেনি কোনো চিকিৎসক তার নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে বলে যে ‘রোগীর সেবার স্বার্থে আপনাদের কোনো পরামর্শ থাকলে আমাদের জানাবেন। এ হচ্ছে আমাদের স্যার ডা. শাওন বিন রহমান।

গত এক বছরে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা সেবার সহজীকরণ ও আধুনিকতার ছোঁয়া আনতে যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছেন তিনি, সেই পরিশ্রম শেষ নয়, চলমান আছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, আবাসিক সার্জন (জরুরি বিভাগ), দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তিনি ও তার টিম জরুরি বিভাগের রোগীসেবা উন্নয়নে অবিচলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমেই চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের সঙ্গে বসে বিভাগীয় সমস্যা চিহ্নিত করেন এবং সেগুলোর সমাধানে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যান। প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জনে প্রেরণা হিসেবে তিনি তার শিক্ষক, সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম স্যারকে অনুসরণ করেন। এছাড়া সাবেক পরিচালক ও বর্তমান, অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল ম্যাডাম এবং অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন স্যার এর সর্বাত্মক সহযোগিতা, দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ তার অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করেছি।
আমাদের সবারই উচিত দায়িত্বকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করা। গতানুগতিক ধারা ভেঙে কাজের মধ্য দিয়েই বাঁচতে চাই।

জরুরি বিভাগে বাস্তবায়িত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম:

ট্রায়াজ ও অবজারভেশন ইউনিটের মাঝে অটো-লক দরজা স্থাপন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ট্রায়াজে তিনটি বেডের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন সংযোজন (প্রক্রিয়াধীন)। শিশু রোগীদের জন্য অপারেশন থিয়েটারে স্টেরাইল ড্রেসিং বেড স্থাপন। ড্রেসিং ড্রাম রাখার জন্য নতুন তাক স্থাপন। চিকিৎসক ও নার্সদের হ্যান্ডওয়াশের জন্য নষ্ট বেসিন পরিবর্তন। চিকিৎসক ও নার্সদের নির্ধারিত ড্রেস চেঞ্জ রুম স্টাফদের ব্যবহারমুক্ত করা। স্টাফদের বাইরের পোশাক রাখার জন্য কেবিনেট স্থাপন। রোগীদের জন্য বেড অনুযায়ী কেবিনেট স্থাপন, যাতে ব্যক্তিগত সামগ্রী নিরাপদে রাখা যায়। চিকিৎসক, নার্স, স্টাফ ও রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের ফিল্টার স্থাপন। ২৪ ঘণ্টা অপারেশন পরিচালনায় এ্যানেস্থেটিস্ট রোস্টার চালু ও তাদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ স্থাপন। চিকিৎসক রুমে এক্স-রে ও সিটি স্ক্যান দেখার জন্য ভিউ বক্স সংযোজন। আবাসিক সার্জনদের কার্যকাল সংবলিত অনার বোর্ড স্থাপন। নার্সদের অনুপ্রেরণায় প্রতি মাসে ‘বেস্ট নার্স অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান। চিকিৎসক রুমের ভাঙা চেয়ার ও সোফা প্রতিস্থাপন। মাস ক্যাজুয়ালটির জন্য আলাদা ইন্সিডেন্ট কার্ট সংযোজন। ড্রেসার, ওয়ার্ডবয়, আয়া ও ক্লিনারদের ইউনিফর্ম পরে বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ। চিকিৎসক ও নার্সদের সহযোগিতায় একজন এমএলএসএস বহাল। জরুরি বিভাগের সামনে মোটরসাইকেল পার্কিং নিষিদ্ধ। পুরাতন বেড পরিবর্তন করে নতুন বেডের ব্যবস্থা। ড্রেসিং রুমে বার্ন ট্যাংকের পাশাপাশি অতিরিক্ত ড্রেসিং বেড ও সরঞ্জাম রাখার আলমারি সংযোজন। রোগীর স্বজনদের জন্য অপেক্ষার স্থানে অতিরিক্ত বসার ব্যবস্থা। অপারেশন থিয়েটারের সামনে অপেক্ষমাণ রোগীর জন্য আসন স্থাপন। জরুরি বিভাগের করিডরে ২৪ ঘণ্টা পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত।

মাইলস্টোন ট্রাজেডি, টঙ্গী কেমিক্যাল গুদামে অগ্নিকাণ্ড, মিরপুর গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দুর্ঘটনা, নারায়ণগঞ্জ বিসিক অগ্নিকাণ্ডসহ একাধিক বড় মাস ক্যাজুয়ালটি সফলভাবে ও অভিযোগ বিহীনভাবে সামাল দেওয়া। আরও কিছু উন্নয়নমূলক কাজ বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

টিমওয়ার্কই সাফল্যের চাবিকাঠি:

জরুরি বিভাগে আমরা একদল হিসেবে কাজ করি সম্মানিত পরিচালক স্যার থেকে শুরু করে ক্লিনার পর্যন্ত সবাই এ টিমের অংশ। প্রতিটি উন্নয়নের পেছনে সবার অবদান রয়েছে। সহকর্মী ডা. শাহীন বিপ্লবের নিরলস সহযোগিতার কথাও তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, সবাই দোয়া করবেন ও পরামর্শ দেবেন, যাতে রোগীদের সেবার মান আরও উন্নত করতে পারি এবং রোগীর সেবা ও অন্যান্য বিষয়ে যদি কারো কোনো পরামর্শ থাকে জানানোর জন্য অনুরোধ রইল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.