Take a fresh look at your lifestyle.

শেষ রক্ষা হলো না ডা. ফাতেমা দোজার, অবৈধভাবে ১২ বছর সরকারি চাকরি

30

বরিশাল হেলথ ইনফো ডেস্ক :
সরকারি চাকরির ২৫ বছরের মধ্যে ১২ বছরই অবৈধভাবে কাটিয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজা। অবৈধভাবে ভোগ করেছেন বেতন-ভাতা, পদোন্নতিও নিয়েছেন তিনি। গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ফৌজদারি মামলায় কারাবাসের তথ্য গোপন, স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে দেড় বছর পর আবার একই হাসপাতালে যোগদান, বিদেশে সেমিনারে যোগদানের ভুয়া আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ ইত্যাদি নানা অনিয়ম ও অসদাচরণ অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। অবশেষে শেষ রক্ষা হলো না ডা. ফাতেমা দোজার। নানা অভিযোগে সম্প্রতি তাকে চাকরিচ্যুত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে ২০২৩ সালে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। তদন্তে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদণ্ড হিসেবে বরখাস্তের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। ডা. ফাতেমা দোজাকে চূড়ান্ত বরখাস্তের সিদ্ধান্ত পরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাবে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) সম্মতি জানায় এবং রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে এই প্রস্তাব অনুমোদন করেন।

“যারা নানা অনিয়মে জড়িত ছিল তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাঠাচ্ছি। সিস্টেমের কারণে ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে। যারাই অনিয়মে জড়িত, খুঁজে বের করা হচ্ছে। তাদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে।
অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, পরিচালক, এনআইসিভিডি।

জানা গেছে, ফাতেমা দোজা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ২০০৭ সালে তিনি রেডিওলোজিস্ট পদে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে যোগ দেন। পরে ২০০৯ সালে একই প্রতিষ্ঠানে ডা. ফাতেমা দোজা (পরিচিতি নম্বর-৪২৭৩৭) মেডিকেল অফিসার পদে যোগ দেন। ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ডা. ফাতেমা দোজা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই সঙ্গে তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ৬ মাসের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিয়োগের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লিখিত পদে যোগদানের লক্ষ্যে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচিব বরাবরে লিখিত আবেদন দাখিল করেন ডা. ফাতেমা।

এদিকে নির্ধারিত মেয়াদের পরও বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তার চাকরি স্থায়ী করেনি। যার সত্যতা পাওয়া যায় জাতীয় হদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিঠিপত্র গ্রহণ এবং বিতরণের ডায়েরির খাতায়।

ডা. ফাতেমা দোজার সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির আবেদন ডায়েরি খাতায় যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। আবেদনটি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ২০১২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেন। যার স্মারক নং- এনআইসিভিডি/পার-২/৯৫৪। স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার এক বছর ছয় মাস পরে জাল-জালিয়াতি এবং তদবিরের মাধ্যমে সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি গোপন করেন অভিযুক্ত ডা. ফাতেমা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.