Take a fresh look at your lifestyle.

ডা. জাহাঙ্গীর কবির বললেন শোকজ নোটিশ পেলে বিএমডিসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব

৯৯

হেলথ ইনফো ডেস্ক :
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) পাঠানো কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশের বিষয়টি যদি সত্যি হয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরব এবং প্রয়োজনে আইনি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা নেব।

সম্প্রতি বিএমডিসির পাঠানো শোকজ নোটিশের বিষয়ে মেডিভয়েসে সংবাদ প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় ডা. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির এসব কথা বলেন।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আমি আগে নোটিশ পাই। আমার সামনে আইনজীবী বসে আছেন—আমার ব্যক্তিগত আইনজীবী। নোটিশ পাওয়ার পরে দেখব, তারা কীভাবে নোটিশটা দিয়েছে, এর কোনো প্রমাণ আছে কি না, প্রমাণভিত্তিক করেছে কি না। যিনি অভিযোগ করেছেন, কিসের ভিত্তিতে করেছেন—এ বিষয়ে বিএমডিসির কাছে জানতে চাওয়া হবে। যদি দেখা যায় মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে তারা শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে, তাহলে এ ব্যাপারে যত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা নেওয়া হবে। কারণ, এটা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না।’

ভিডিও বার্তায় ডা. জাহাঙ্গীর কবির জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ২০০০ সালে আমি এমবিবিএস পাস করেছি—এটা আমি সব সময় বলি। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি প্রেসক্রিপশন উঁচিয়ে বলছেন, ‘এটা বহু লোকের কাছে আছে, কারণ আমি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছি। আজকেও অনেকগুলো রোগী দেখেছি। আমার চিকিৎসা পত্রে শুধু এমবিবিএস ডিগ্রি আর রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া আছে।’

মেডিভয়েসে সংবাদ প্রকাশের পর শোকজের বিষয়ে তিনি জানতে পারেন। তবে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটার সত্যতা কতটুকু, আমরা নিশ্চিত নই, কারণ এখনো কোনো শোকজ নোটিশ পাইনি।’

যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিএমডিসি শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি চিকিৎসা পত্রে কখনো এফসিপিএস লিখিনি। তবে এটা হতে পারে—অনেক ভুয়া পেজ আছে আমার নামে। প্রতারক চক্ররা বিভিন্ন ওষুধ বিক্রি করে, আমার ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে, এবং সেখানে তারা নানান বাহারি ডিগ্রি আমার নামের পাশে জুড়ে দেয়। বিএমডিসির উচিত, কাউকে কোনো সংবাদ দেওয়ার আগে, কোনো চিঠি পাঠানোর আগে বা কোনো নোটিশ জারি করার আগে এসব বিষয় তদন্ত করে দেখা।’ পরে তিনি দাবি করেন, ‘আমি কখনো কোথাও এফসিপিএস ডিগ্রি লিখিনি—এটি একটি ভুয়া ও বানোয়াট তথ্য।’

ভিডিও বার্তায় তিনি তাঁর দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘যেহেতু আমি বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তাই আপনাদেরও সতর্ক করছি। এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব, যখন শোকজ নোটিশ অফিসিয়ালি পাব। যদি বিষয়টি সত্য হয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরব এবং প্রয়োজনে আইনি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা নেব।’

শোকজ নোটিশ পাওয়ার বিষয়ে শনিবার (৮ নভেম্বর) ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর কাছ থেকে জানা যায়, এখনো তাদের হাতে নোটিশ পৌঁছায়নি।

এই নোটিশ পাঠানোর পরে, এর সত্যতা নিশ্চিত করে বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন মেডিভয়েসকে বলেন, ‘এর আগেও আমরা তাকে শোকজ করেছিলাম। কারণ তিনি যেসব ডিগ্রি অর্জন করেননি, তা ব্যবহার করে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এখনকার শোকজ নোটিস পাননি বলে তিনি দাবি করলেও আমাদের কাছে রেকর্ড আছে যে, তাকে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। অবশ্য এতো সময়ে নোটিস তাঁর কাছে পৌঁছানোর কথা। তিনি যদি তা গ্রহণ না করে থাকেন বা এখনো না পৌঁছে থাকে, তার অর্থ এই নয় যে আমরা পাঠাইনি, বরং আমরা পাঠিয়েছি।’

বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্সের (বিসিপিএস) সচিব অধ্যাপক আবুল বাশার মো. জামাল মেডিভয়েসকে জানান, ‘সোশাল মিডিয়াতে যেই ব্যক্তির নামের সাথে এফসিপিএস ডিগ্রির ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই নাম ও ছবির কেউ বাস্তবে এফসিপিএস পাশ করেননি। ডা. জাহাঙ্গীর কবির ভিডিও বার্তায় নিজেও বলেছে, কিছু ভুয়া পেজ আছে, যা তার নামে এসব ডিগ্রি ব্যবহার করছে। যদি এমন হয়, তাহলে এটি ধরার দায়িত্ব তাঁর।’

ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার সম্পর্কিত সত্যতা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া জানতে ডা. লিয়াকত হোসেনকে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.